যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন নিয়ে আলোচনা করতে সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আজ বুধবার এ বৈঠক শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গেল সপ্তাহে ভাইরাসটির নতুন ধরন সম্পর্কে তথ্য জানায় যুক্তরাজ্য। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, আগের তুলনায় নতুন ধরনের ভাইরাসটি সংক্রমণ ক্ষমতা ৭০ শতাংশ বেশি। এ তথ্যে বিশ্বব্যাপী নতুন উদ্বেগ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ৩০টির বেশি দেশ যুক্তরাজ্যের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
কীভাবে করোনার এই নতুন ধরণকে মোকাবিলা করা যায়, তার কৌশল ঠিক করতে জরুরি বৈঠক ডেকেছে ডব্লিউএইচওর সদস্যদের এ বৈঠকে। তথ্য বিনিময়ে সহায়তার উদ্দেশ্যেই এই বৈঠক বলে জানান ডব্লিউএইচওর এক মুখপাত্র। এক টুইট বার্তায় ডব্লিউএইচওর ইউরোপীয় অঞ্চলের পরিচালক হ্যানস ক্লুজ বলেন, আরো তথ্য না আসা পর্যন্ত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভ্রমণ সীমাবদ্ধ রাখাই শ্রেয়। করোনার নতুন ধরন নিয়ে অতিরিক্ত ভয়ের কিছু নেই বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। সংস্থাটির মতে, মহামারির বিবর্তনের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এটি। করোনার নতুন ধরন শনাক্ত করায় যুক্তরাজ্যের প্রশংসা করেছে ডব্লিউএইচও।
চলমান উদ্বেগের মধ্যে ভাইরাসটি সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য আদানপ্রদানের লক্ষ্যেই আজকের বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। করোনার নতুন ধরনটিকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায়- সেই কৌশল নিয়েও আলোচনা করবেন ডব্লিউএইচওর সদস্যরা।
করোনার নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার পর অনেক দেশ যুক্তরাজ্যের ওপর ভ্রমণ–নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ কারণে আটকা পড়েছে জরুরি পণ্যবাহী বহু গাড়ি। এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও জানায়, খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানির মতো গুরুত্বপূর্ণ মালামাল সরবরাহের জন্য আটকে থাকা পণ্যবাহী সব যানবাহনকে ঢোকার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।
এদিকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আলোচনার পর দেশটির সাথে সীমান্ত খুলে দিয়েছে ফ্রান্স। শিথিল করা হয়েছে বিমান, রেল এবং সমুদ্র পথে চলাচল। তবে যুক্তরাজ্য থেকে যারা ফ্রান্সে ঢুকবেন তাদেরকে অবশ্যই করোনা নেগেটিভ সনদ দেখাতে হবে। ব্রিটিশ পরিবহন মন্ত্রী জানিয়েছেন, দুয়েকদিনের মধ্যে ট্রাক চালকদের করোনা পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। আক্রান্ত না হলে তারা ফ্রান্সে ঢোকার অনুমতি পাবেন।
শুধু ফ্রান্স নয়, ইউরোপের বাকি দেশগুলোসহ প্রায় অর্ধশত দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ রেখেছে। তবে কড়াকড়ি শিথিল করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। প্রয়োজনে করোনা পরীক্ষা বা সেলফ আইসোলেশনের শর্ত দিয়ে হলেও প্রবেশের অনুমতি দেয়া উচিত বলে মত সংস্থাটির। তবে অতি জরুরি না হলে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে তারা।
নতুন ধরণের এই করোনাভাইরাস মারাত্মক ছোঁয়াচে। আগেরটির তুলনায় নতুন এই ভাইরাস ছড়ানোর হার ৭০ শতাংশ বেশি। ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো করোনার নতুন ধরনের বিরুদ্ধে তাদের তৈরি টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষায় তৎপর হয়ে উঠেছে। করোনার নতুন ধরনের বিরুদ্ধে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা কাজ করবে বলে জানিয়েছেন বায়োএনটেকের প্রধান গবেষক ও স্বত্বাধিকারী উগুর শাহিন।
জার্মান জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন স্পান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নতুন ধরনের করোনার বিরুদ্ধে এখনকার টিকা কার্যকর। ডব্লিউএইচও জানায়, টিকার কার্যকারিতার ওপর করোনার নতুন ধরনের কোনো প্রভাব আছে কি না, তা নির্ধারণের মতো যথেষ্ট তথ্য এখন পর্যন্ত তাদের হাতে নেই।
0 comments:
Post a Comment
Please do not enter any link in the comment Box