এ ছাড়া স্থানীয়ভাবেও প্রশিক্ষণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সেটির জন্য আরো ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। মূলত বিভিন্ন দেশের স্কুলগুলোতে বাজার থেকে শুরু করে রান্না করা এবং কীভাবে তা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়- তা দেখতেই অধিদপ্তরের পাশাপাশি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন এবং বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন বিভাগের কর্মকর্তারাও বিদেশ ভ্রমণের এই সুযোগ পাচ্ছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নতুন এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে মোট ১৯ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আগামী পাঁচ বছর দেশের ৫০৯টি উপজেলায় ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে তিন দিন গরম খিচুরি এবং তিন দিন পুষ্টিকর বিস্কুট সরবরাহ করা হবে। তবে প্রস্তাবিত বিদেশে প্রশিক্ষণ বাদ দিতে চায় কমিশন এবং স্থানীয় প্রশিক্ষণের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, দারিদ্র্য পীড়িত এলাকায় 'স্কুল ফিডিং কর্মসূচি' শীর্ষক প্রকল্প ২০১০ সাল থেকে শুরু হয়েছে। ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি আগামী ডিসেম্বরে শেষ হবে। এটির আওতায় বর্তমানে দেশের ১০৪টি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৭৫ গ্রাম ওজনের এক প্যাকেট করে উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ বিস্কুট দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া চার লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে সবজি খিচুড়ি ও ডিম খিচুড়ি সরবরাহ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক রুহুল আমিন খান জানান, মূলত বিভিন্ন দেশের স্কুলগুলোতে বাজার থেকে শুরু করে রান্না করা এবং কীভাবে তা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়- তা দেখতেই বিদেশে প্রশিক্ষণের এ আয়োজন। এক্ষেত্রে পাঁচ বছরে এক হাজার কর্মকর্তার বিদেশে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে। তাছাড়া সুষ্ঠুভাবে কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিদেশে প্রশিক্ষণের দরকার রয়েছে।
প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের আওতায় এসইউভি ও ছয়টি মাইক্রোবাস কিনতে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয় করেত চায় ডিপিই। এছাড়া গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দেড় কোটি, জ্বালানি তেল ও লুব্রিকেন্টের জন্য ৬০ লাখ এবং যাতায়াতের জন্য ২০ লাখ টাকা চেয়েছে। পরিবহন সংক্রান্ত এই ব্যয়েরও যৌক্তিক ব্যাখ্যা চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এর পাশাপাশি পরিদর্শন ও মূল্যায়নের জন্য আরও পাঁচ কোটি টাকা চেয়েছে ডিপিই।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্রধান স্বপন কুমার ঘোষ বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় বিদেশ ভ্রমণের কোনো যৌক্তিকতা নেই। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন সব ধরনের বিদেশ সফর বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সবকিছু খতিয়ে দেখে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় এখন ১০৪ উপজেলার দরিদ্রপীড়িত এলাকায় উচ্চ পুষ্টিসমৃদ্ধ ৭৫ গ্রাম ওজনের বিস্কুট, বিতরণ করা হচ্ছে। ২০১০ সালে ৫০ কোটি টাকার ওই প্রকল্প চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে। এছাড়া ২০১৯ সালের সিদ্ধান্তের আলোক প্রায় চার লাখ শিক্ষার্থীকে ডিম খিচুড়ি দেওয়া হচ্ছে।
0 comments:
Post a Comment
Please do not enter any link in the comment Box